অ্যান্টিবায়োটিক খেলে
কি কি হয়
১৯২৮ সালে অ্যান্টিবায়োটিক
পেনিসিলিন আবিষ্কারের জন্য যখন ১৯৪৫ সালে তাঁকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হলো, তখন আলেকজান্ডার ফ্লেমিং
এমনটাই বলেছিলেন। কারণ,
অনেক রোগজীবাণু অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতি প্রতিরোধী হয়ে উঠছে।
অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স এখন জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হতে পারে। যদি আপনি ঠিকমতো অ্যান্টিবায়োটিক
সেবন না করেন।
অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স বা প্রতিরোধী বলতে বোঝায় অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যক্ষমতা
নষ্ট হয়ে যাওয়া। অর্থাৎ কোনো বিশেষ জীবাণু নাশে যেসব গুণ ওষুধে থাকার কথা, তা ঠিকই রয়েছে কিন্তু
সবকিছুর পরও ওই জীবাণুর বিপক্ষে এটি আর কাজ করতে পারছে না। সাধারণত চিকিৎসকের পরামর্শ
অনুযায়ী আমরা অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করে থাকি। তবে অনেক সময় দেখা যায়, একটু জ্বর কিংবা ঠান্ডা-কাশি
হলে না বুঝেই অনেকে অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে ফেলে। আবার অনেকেই চিকিৎসকের
পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করা শুরু করলেও মাঝপথে গিয়ে খাওয়া বন্ধ করে দেয়
বা ওষুধের কোর্স পূর্ণ করে না। আর এভাবেই অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হয়ে
পড়ে বা তার কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়। এ জন্য প্রায়ই অনেকের মুখে শোনা যায়, আমার না এখন অ্যান্টিবায়োটিকেও
কাজ হয় না।
অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স প্রতিরোধে
* অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ফার্মেসি বা দোকানদার
বললেও ওষুধ খাবেন না।
* চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রে উল্লিখিত ডোজ ও সময় অনুসারে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করুন। রোগের উন্নতি হলেও অ্যান্টিবায়োটিক
সেবন বন্ধ না করে কোর্স সম্পূর্ণ করুন। ডোজ যেন বাদ না হয়, সেদিকে সতর্ক থাকুন।
>অন্যের ব্যবস্থাপত্র দেখে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন কখনই করবেন না। অতীতে অসুস্থতার জন্য
দেওয়া অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া আবার ব্যবহার করবেন না।
* সাধারণত সর্দি-কাশি, ভাইরাস জ্বরে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করা যাবে না। সব রোগে একই ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক
দেওয়া হয় না। রোগভেদে বিভিন্ন রকম অ্যান্টিবায়োটিক রয়েছে। তাই রোগী যদি না বুঝে
নিজে নিজে
ওষুধ কিনে খায়, তখন রোগ তো সারবেই না, উল্টো ক্ষতি হয়ে যেতে পারে এবং রোগ দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে।
* রোগীকে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার আগে চিকিৎসকের জানা উচিত আসলেই রোগীর শরীরে এর
প্রয়োজন আছে কি না। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রে পূর্ণমাত্রা এবং কত দিন খাবে, তা উল্লেখ করে দিতে হবে। চিকিৎসকের রোগীর বয়স, ওজনের দিকে খেয়াল রাখতে
হবে। বিশেষ করে বৃদ্ধ, শিশু ও সন্তানসম্ভবা মায়ের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার আগে যথেষ্ট সতর্কতা
অবলম্বন করতে হবে।
* চিকিৎসককে জেনে নিতে হবে রোগীর অন্য কোনো রোগ আছে কি না। যদি রোগীর এমন কোনো রোগ
থাকে, যেখানে অ্যান্টিবায়োটিক
দেওয়া যাবে না এবং চিকিৎসক যদি বিষয়টি না জানেন, তাহলে ওষুধ সেবনের ফলে রোগীর ক্ষতি হয়ে যেতে
পারে।
* যেকোনো ওষুধের ক্ষেত্রে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। অনেক সময় যদি কোনো ওষুধের
কারণে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়, তখন রোগীকে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের
পরামর্শ নিতে
No comments:
Post a Comment